তাই বাড়েনি তথ্য সংগ্রহের গতি। পুলিশ জানায়, আশুলিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস হলেও থানায় তথ্য রয়েছে ১০ হাজার মানুষের। পুরো তথ্য সংগ্রহে কতদিন সময় লাগবে তা জানেনা কেউ।
সহজেই অপরাধী সনাক্ত করতে এ প্রক্রিয়াকে ভালো উদ্যোগ বলছেন স্থানীয়রা। কিন্তু এক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতি ছাড়াও তথ্য নিশ্চিতকরণের নামে পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। উৎকোচ না দিলে তথ্য ভুল বলে জানানো হয়। তাছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিতকরণ প্রক্রিয়া শেষে তথ্য ফরমের একটি অংশ বাড়িওয়ালাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা সম্ভব হয়নি।
আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকার বাড়িওয়ালা আলী হামজা জানান, ডিইপিজেড এলাকার পিছনে তার ২০টি টিনশেড ঘর রয়েছে। তিনি ভাড়াটিয়াদের ছবিসহ তথ্য ফরম থানায় দিয়ে এসেছেন। তবে ফরমের একটি অংশ পুলিশ নিশ্চিতকরণ শেষে এখনো ফেরত দেয়নি। ডেন্ডাবর এলাকার স্থানীয় সাংবাদিক মোজাফফর হোসেন জয় জানান, ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি বেশ দুর্বল ও অস্বচ্ছ। কারণ ভাড়াটিয়ারাদের তথ্য
যাচাই-বাছাইয়ের কোনো উপায় নেই। তাছাড়া পুলিশ এ বিষয়ে তেমন তৎপর নয়। আদমশুমারির মতো করলে সঠিক তথ্য পাওয়া যেত, আবার বেকারদের একটি কর্মসংস্থান হতো। বাড়ইপাড়া এলাকার একটি বাসায় বিভিন্ন জেলার কয়েকজন মিলে ভাড়া থাকেন শাহেদুর রহমান। তারা ‘এনার্জি প্যাক’ কারখানায় কাজ করেন। কিন্তু তথ্য ফরম নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। কারণ সবার তথ্য দেওয়ার মতো জায়গা ফরমে নেই। তাছাড়া আগের বাড়িওয়ালার নাম-ফোন নম্বরও এখন তাদের কাছে নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভাড়াটিয়া জানান, তিনি পরিবার নিয়ে জিরানীতে থাকেন। প্রায় ৪ মাস আগে ভাড়াটিয়া ফরম পূরণ করে জমা দেন। তার কিছুদিন পর সিরাজগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে পুলিশ ঠিকানা ভেরিফেকেশন জন্য যায়। এ সময় পুলিশ তার বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন ফির নামে ১৫০০ টাকা নিয়ে আসে।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির জানান, আগামী ৩ থেকে ৪ মাসে তথ্য পূরণের পরিমাণ ৭০ ভাগ বাড়াতে পারবেন বলে আশা করেন। বিভিন্ন অনিময়মের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই সবকিছু দ্রুত করা সম্ভব হয় না। চেষ্টা করি স্বচ্ছতার মধ্যে থেকে সব কিছু করার। ওসি জানান, বর্তমানে যারা তথ্য দিচ্ছে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ভবিষ্যতে যেন জাতীয় পরিচয়পত্র গুলো দ্রুত নিশ্চিত করা যায় সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। পুলিশের পক্ষে এ কাজ একা সম্ভব নয় স্বীকার করে তিনি এজন্য ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের সহায়তা করতে আহ্বান জানান। বাড়িওয়ালাদের সচেতনতা বাড়াতে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ, পাড়া-মহল্লায় পোস্টার সাঁটানো ও মাইকিং করা হচ্ছে বলে ওসি জানান।